পরিপাকতন্ত্রের প্রদাহজনিত অসুখ বা ইনফ্ল্যামেটরি বাওল ডিজিজ বা আইবিডি আসলে কয়েকটি অসুখের একটি সম্মিলিত নাম। দীর্ঘমেয়াদি বা ক্রনিক রোগ এগুলো। ডায়রিয়া, পেটে ও বুকে ব্যথা, ওজন কমা, দুর্বলতাবোধ ইত্যাদি সাধারণ উপসর্গ থাকে রোগটিতে।
মূলত দুটি অসুখকে আইবিডি বা পরিপাকতন্ত্রের দীর্ঘমেয়াদি অসুখ বলা হয়। আলসারেটিভ কোলাইটিস ও ক্রনস ডিজিজ। এ দুটির মধ্যে আমাদের দেশে আলসারেটিভ কোলাইটিস বেশি হয়। ক্রনস ডিজিজও হয়, তবে উন্নত দেশে এটি অনেক বেশি হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এই দীর্ঘমেয়াদি রোগগুলো রোগীর প্রাণহানির কারণও ঘটায়। আবার রোগগুলো চিকিৎসায় খুব একটা ভালো ফল পাওয়া যায় না। কিছু ক্ষেত্রে অত্যন্ত ব্যয়বহুলও।
আলসারেটিভ কোলাইটিস ও ক্রনস ডিজিজের সাধারণত লক্ষণগুলো অনেকটা একই রকম। ঘন ঘন ডায়রিয়া হয়। জ্বরজ্বর ভাব। দুর্বলতাবোধ হয় ও ক্লান্তি লাগে। পেটে ব্যথা। কারো কারো পেট মোচড়ায়। অনেকের বমি বা বমি বমিভাব হয়। পায়খানার সঙ্গে রক্ত যায়। তবে সব সময় যে তাজা রক্ত যায় তা নয়। পায়খানায় রক্ত থাকার কারণে অনেক সময় ঘন কালো রঙের পায়খানাও হয়। এগুলোকে বলে অকাল্ট ব্লাড।খাওয়ার আগ্রহ কমে যায়। চেষ্টা করেও খাওয়া যায় না।কোনো কারণ ছাড়াই ওজন কমতে থাকে।
আলসারেটিভ কোলাইটিস সাধারণত বৃহদান্ত্র বা লার্জ ইনটেসটাইনের মধ্যে সীমিত থাকে এবং রেকটাম (মলদ্বার) থেকে শুরু হয়ে মিউকাস পর্যন্ত আক্রান্ত হতে পারে। অন্যদিকে ক্রনস ডিজিস মুখমণ্ডল থেকে শুরু করে পায়ুপথ পর্যন্ত যেকোনো স্থানে হতে পারে। রোগ দুটি সাধারণত ১৫ থেকে ৪০ বছর বয়সের মধ্যে হয়ে থাকে।
# অলসারেটিভ কোলাইটিস-
এ রোগ বৃহদান্ত্রের প্রদাহ হয়ে অন্ত্রের মিউকাস মেমব্রেনে বা মিউকাস আবরণীতে ক্ষত সৃষ্টি করে। কোন অঞ্চলে হয়েছে এবং রোগের মাত্রা কেমন তার ওপর নির্ভর করে এর ধরন নির্ণয় করা হয়। যেমন—মলদ্বারের কাছে হলে আলসারেটিভ প্রক্টাইটিস, সিগময়েড কোলন এবং মলদ্বারে হলে প্রক্টসিগময়েডাইটিস ইত্যাদি। এ ছাড়া আছে লেফট সাইডেড কোলাইটিস, প্যানকোলাইটিস, অ্যাকিউট সিভিয়ার আলসারেটিভ কোলাইটিস ইত্যাদি ধরনও।
# ক্রনস ডিজিজ-
এই রোগে মুখমণ্ডল থেকে শুরু করে পায়ুপথ পর্যন্ত যেকোনো স্থান আক্রান্ত হতে পারে। সাধারণত আইলিয়াম বা স্মল ইনটেসটাইনের একটি বিশেষ অংশ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কখনো কখনো কোলনও আক্রান্ত হতে দেখা যায়। এ রোগে পরিপাকতন্ত্রের নালির গাত্রে স্কার বা ফাইব্রোসিস হতে থাকে এবং নালি সরু হয়ে যেতে থাকে। জটিলতা হিসেবে পায়খানার সমস্যা হওয়া, ফোড়া, ফিস্টুলাও হতে পারে।
# চিকিৎসা: যেহেতু এই রোগ দুটির নির্দিষ্ট কোন কারণ নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি। তাই শতভাগ সুস্থ হওয়ার জন্য কোন মেডিকেশন আবিষ্কার হয়নি। শুধু অসুখ কে দমিয়ে রেখে রোগীকে উপশম দেওয়া হয় মাত্র। তাও আবার অত্যাধিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াযুক্ত ও ব্যয়বহুল। ক্লাসিকাল হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার মাধ্যমে এ রোগের রোগীরা উপশম থাকতে পারে। এতে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে না এবং অত্যান্ত সহজলভ্য।
0 comments:
Thanks a million for visiting and your valuable review.